আগ্রাসী ক্রিকেটের এই যুগে ওয়ানডে এবং টেস্টেও খেলোয়াড়দের খেলার ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ওয়ানডেতে ২৮টি ইনিংসেই ৪০০ বা এর বেশি রান দেখা গেছে স্কোরবোর্ডে। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোও সেই সীমানার কাছে ঘুরাফেরা করছে। গতকাল সহযোগী দেশ হিসেবে ওয়ানডেতে পঞ্চম সর্বোচ্চ ৩৬৯ রান তুলেছিল স্কটল্যান্ড। হয়েছে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ডও। কিন্তু সেই রান সফলভাবে তাড়া করে নেদারল্যান্ডস বিশ্বরেকর্ড গড়েছে।
বিশ্বকাপ লিগ–২ এর অধীনে শুক্রবার স্কটল্যান্ডের ডান্ডিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। যেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক স্কটিশদের পক্ষে ঝড় তোলেন ওপেনার জর্জ মুনসি। ১৫০ বলে তিনি ১৯১ রানের রেকর্ডগড়া ইনিংস খেলেছেন। যা সহযোগী দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। আর ৯ রান পেলে তিনি সহযোগী দেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ানও হতে পারতেন।
ওপেনিংয়ে নেমেও ৪৯তম ওভার পর্যন্ত খেলেছেন মুনসি। রেকর্ডগড়া ইনিংসের পথে বাঁ-হাতি এই ওপেনার ১৪টি চার ও ১১টি ছক্কা হাঁকান। এ ছাড়া স্কটিশ অধিনায়ক ম্যাথু ক্রসের ৫৯ রানে ভর করে তাদের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৩৬৯ রান। বিপরীতে ডাচদের পক্ষে ২টি করে উইকেট শিকার করেন আরিয়ান দত্ত ও মিকায়েল লেভিট।
লক্ষ্য তাড়ায় জিততে হলে নেদারল্যান্ডসকে ইতিহাসই গড়তে হতো। কারণ এর আগে সহযোগী কোনো দেশ এত বড় লক্ষ্য পেরোতে পারেনি। ২০১১ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৩২৯ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল তৎকালীন সহযোগী দেন আয়ারল্যান্ড। এবার ৩৭০ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলল স্কট এডওয়ার্ডসের নেদারল্যান্ডস। তাদের পক্ষে ১৩০ বলে ১২ চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন ম্যাক্স ও’দাউদ। এ নিয়ে ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বার একই ম্যাচে দুটি দেড়শ রানের ব্যক্তিগত ইনিংস দেখা গেল।
ডাচ এই ওপেনার ছাড়াও লক্ষ্য তাড়ায় কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন তেজা নিদামানুরু (৫১), নোয়াহ ক্রোয়েস (৫০) ও মিকায়েল লেভিট (৪৪)। সবমিলিয়ে দলীয় প্রচেষ্টায় ইতিহাসগড়া জয় পেল নেদারল্যান্ডস। ৪ বল এবং ৪ উইকেট হাতে রেখেই ডাচরা জয় নিশ্চিত করেছে। স্কটিশদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন সাফইয়ান শরিফ।
সহযোগী দেশের হিসেবে নেদারল্যান্ডস ওয়ানডের সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়ায় সফল হলেও, সবমিলিয়ে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ওয়ানডেতে প্রথম দুটি বড় লক্ষ্যই তাড়া করে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৬ সালে তারা ৪৩৫ এবং ১০ বছর পর ২০১৬ সালে ৩৭২ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত দুটি ম্যাচেই হৃদয় ভেঙেছে অজিদের। অবশ্য দুইয়ে থাকতে পারত ডাচরা। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য তাড়ায় তারা সমান ৩৭৪ রান করে ম্যাচ ড্র করেছিল।
খুলনা গেজেট/এএজে